1. admin@noyasomoy24.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ধামরাইয়ে কম্বল পেল ৬শতাধিক পরিবার কেলিয়া নতুন কুঁড়ি একতা যুব সংঘের কার্য নির্বাহী কমিটি গঠন ধামরাই বাজার বণিক সমিতির নবগঠিত কমিটিকে সংবর্ধনা ধামরাইয়ে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করছেন নাজমুল হাসান অভি কোরআনের চোখে জাহেলি যুগের বৈশিষ্ট্য লেফটেন্যান্ট তানজিম নিহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক ‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ ধামরাইয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল ধামরাইয়ে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা ধামরাইয়ে ঈশাননগর দেলধা সূর্যমুখী যুব সংঘের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

গুনাহমুক্ত জীবনে ফিরে আসাই মুমিনের তওবা

নয়া সময় ডেস্ক:
  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩

রমজান মাসে তওবার মাধ্যমে গুনাহমুক্ত থেকেছে মুমিন রোজাদার। গুনাহ থেকে ফিরে আসা মানুষের এ পথচলা অব্যাহত রাখা জরুরি। এ জন্য রমজান পরবর্তী এ সময়েও তওবাহ-ইসতেগফারে নিয়োজিত থাকার বিকল্প নেই।
মানুষ গুনাহ ও ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত নয়। প্রত্যেক আদম সন্তান গুনাহ করে তবে সর্বোত্তম পাপী হলো, তওবাকারী। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বাণীতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَأَنِ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوبُوٓاْ إِلَيۡهِ يُمَتِّعۡكُم مَّتَٰعًا حَسَنًا إِلَىٰٓ أَجَلٖ مُّسَمّٗى وَيُؤۡتِ كُلَّ ذِي فَضۡلٖ فَضۡلَهُۥۖ وَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنِّيٓ أَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٖ كَبِيرٍ
‘আরও যে, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, তারপর তাঁর দিকে ফিরে আস, তিনি তোমাদেরকে এক নির্দিষ্ট কালের এক উত্তম জীবন উপভোগ করতে দেবেন এবং তিনি প্রত্যেক গুণীজনকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দান করবেন। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে নিশ্চয়ই আমি তোমাদের উপর মহাদিনের শাস্তির আশংকা করি।’ (সুরা হুদ: আয়াত ৩)

আল্লাহ তাআলা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা এভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন-
قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞ فَٱسۡتَقِيمُوٓاْ إِلَيۡهِ وَٱسۡتَغۡفِرُوهُۗ
‘(হে মুহাম্মাদ) আপনি বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ, তবে আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের মা‘বুদ একমাত্র মা‘বুদ। অতএব তাঁরই পথ দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর।’ (সুরা হা-মীম-সিজদাহ: আয়াত ৬)

আল্লাহ তাআলা মুমিনদের উদ্দেশ্যে তওবার করার নির্দেশ দিয়ে বলেন-
وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা আন-নুর: আয়াত ৩১)

মানুষ আল্লাহর কাছে কীভাবে ক্ষমা করবেন, কীভাবে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাআলা মানুষের পাপগুলো মুছে দেবেন সে বর্ণনা তুলে ধরে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَيِّ‍َٔاتِكُمۡ وَيُدۡخِلَكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর, খাঁটি তওবা। আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত।’ (সুরা আত-তাহরিম: আয়াত ৮)
তওবাকারীরা আল্লাহর কাছে অনেক পছন্দের। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন-
إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلۡمُتَطَهِّرِينَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তওবাকারী এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন।’ (সুরা আল-বাকারা: আয়াত ২২২)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকের একাদিক বর্ণনা তওবাকারীর কথা এভাবে তুলে ধরেছেন-
১. হজরত আগাররা ইবন ইয়াসার আল-মুজানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى اللهِ، فَإِنِّي أَتُوبُ، فِي الْيَوْمِ إِلَيْهِ مِائَةَ، مَرَّةٍ
‘হে লোকসকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর। কারণ, আমি প্রতিদিন একশত বার তওবা করি।’ (মুসলিম ২৭০২)

২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-
وَاللَّهِ إِنِّي لَأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي اليَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً
‘আল্লাহর শপথ! অবশ্যই আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি ও ৭০ বারেরও অধিক তাওবা করি।’ (বুখারি ৬৩০৭)
৩. হজরত আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
لَلَّهُ أَشَدُّ فَرَحًا بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ حِينَ يَتُوبُ إِلَيْهِ، مِنْ أَحَدِكُمْ كَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ بِأَرْضِ فَلَاةٍ، فَانْفَلَتَتْ مِنْهُ وَعَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ، فَأَيِسَ مِنْهَا، فَأَتَى شَجَرَةً، فَاضْطَجَعَ فِي ظِلِّهَا، قَدْ أَيِسَ مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَبَيْنَا هُوَ كَذَلِكَ إِذَا هُوَ بِهَا، قَائِمَةً عِنْدَهُ، فَأَخَذَ بِخِطَامِهَا، ثُمَّ قَالَ مِنْ شِدَّةِ الْفَرَحِ: اللهُمَّ أَنْتَ عَبْدِي وَأَنَا رَبُّكَ، أَخْطَأَ مِنْ شِدَّةِ الْفَرَحِ
‘বান্দা যখন আল্লাহর কাছে তওবা করে, তখন আল্লাহ ওই ব্যক্তির চেয়েও বেশি খুশি হন, যে বিশাল বিস্তৃত মুরুভূমিতে সফর করছিল, হঠাৎ তার বাহন হারিয়ে গেল, যে বাহনে তার খাদ্য ও পানীয় ছিল। কোনো উপায় না দেখে সম্পূর্ণ নিরাশ হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় একটি গাছের ছায়ায় সে শুয়ে পড়লো। এমতাবস্থায় হঠাৎ বাহনটি তার পাশেই উপস্থিত হলো। সে লাগাম হাতে নিয়ে আনন্দের অতিশয্যে বলে ফেললো, আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা এবং আমি তোমার প্রভু। অতি আনন্দে ভুল বলে ফেলল।’ (মুসলিম ২৭৪৭)

আল্লাহ তাআলা বান্দার তওবাতে বেশি খুশি হওয়ার কারণ হচ্ছে- তিনি তওবা ও ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। অনুরূপভাবে তিনি এটাও ভালোবাসেন যে বান্দা তার কাছ থেকে পলায়ন করার পর আবার তার কাছে ফিরে আসছে।

৪. হজরত আনাস এবং ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুম বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
لَوْ أَنَّ لِابْنِ آدَمَ وَادِيًا مِنْ ذَهَبٍ أَحَبَّ أَنْ يَكُونَ لَهُ وَادِيَانِ، وَلَنْ يَمْلَأَ فَاهُ إِلَّا التُّرَابُ، وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَى مَنْ تَابَ
‘বনি আদমের যদি স্বর্ণের একটি উপত্যকা থকে, তাহলে সে তখন দু’টি উপত্যকার কামনা করে। মাটিই একমাত্র তার মুখ ভরতে পারে। আর যে তওবা করে, আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।’ (বুখারি ৬৪৩৬, মুসলিম ১০৪৯)

সুতরাং বোঝা গেলো তওবা হলো, আল্লাহর নাফরমানি ছেড়ে, তার আনুগত্যে ফিরে আসা। যখনই বান্দার মাঝে প্রভুর অবাধ্যতা প্রকাশ পাবে, তখন সেটা থেকে তওবা হচ্ছে, তার কাছে ভীত, সন্ত্রস্ত, লজ্জিত ও নত হয়ে ফিরে আসা ও তার দরজায় দাড়ানো।

গুনাহ বা অন্যায় হয়ে গেল তাৎক্ষণিকভাবে তওবা করা ওয়াজিব। অন্যায়ের পর তওবার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা বা গড়িমসি করা জায়েয নেই। কারণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে আদেশ করেছেন। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ তৎক্ষণাৎ পালনীয়। কারণ, বান্দার জানা নেই যে, বিলম্বে কী পরিণতি হবে। হতে পারে হঠাৎ তার মৃত্যু এসে যাবে, আর তওবার সুযোগ ঘটবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2020-24 Noya Somoy 24.
Theme Customized BY LatestNews
Bengali BN English EN
error: Content is protected !!