আমরা সাধারণত জানি শীতকালেই অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। আসলে বিষয়টি তা নয়। গ্রীষ্মকালেও অতিথি হয়ে কিছু কিছু পাখি আমাদের দেশে আসে। তেমনি একটি পরিযায়ী পাখির নাম বনসুন্দরী। আবাসস্থল দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে হলেও এই পাখিটি আমাদের অতিথি। পাখিটির অবস্থানে বনের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বলে একে বনসুন্দরী বলে ডাকা হয়।
প্রকৃতি-পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এই পাখিটি বাংলাদেশে খুব কম দেখা যায়। সম্প্রতি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শালবন থেকে এক বনসুন্দরীকে ক্যামেরাবন্দি করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহন ওয়াদুদ।
জানা গেছে, পাখিটির দেহে ৯টি রং রয়েছে। তাই অনেকে এই পাখিকে নওরঙ্গা পাখিও বলে থাকেন। গ্রীষ্মকালে অন্য দেশ থেকেই এই পাখিটি আমাদের দেশে আসে প্রজননের জন্য। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত আমাদের দেশে থাকে। বাচ্চা জন্ম দেয়ার পরে বাচ্চাকে নিয়ে চলে যায় নিজ দেশে। এই পাখির প্রিয় খাদ্য হচ্ছে পাতার নিচে থাকা পোকা-মাকড়। লম্বায় বন সুন্দরী ২০ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। লেজ একেবারেই খাটো। প্রথম দেখাতে মনে হবে ওদের লেজ নেই। তবে খুব ভালো করে তাকালে লেজটা ধরা পড়বে।
ওদের পালকে রয়েছে লাল, সাদা, কাল, হলু, নীল, সবুজ ও বাদামি রঙের সংমিশ্রণ। মাথার ওপর হলদে পট্টির মতো। গলার নিচটা সাদা। চোখের দুপাশটা মোটা দাগের কাজল কালির টান দেয়া দাগটি একেবারে ঘাড়ে এসে ঠেকেছে। চোখের উপর রয়েছে সরু সাদা টানা দাগ। পিঠ ও কাধ সবুজ। ঠোঁট কালো। ডানার শুরুটা নীল, নিচের অংশটা বাদামি। বুকের তলার নিচটা লালচে-বাদামি। লেজের পালক টুকটুকে লাল। পা ফিকে বেগুনি। পাখিটির দিকে তাকালে মনে হবে প্রকৃতি সব সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে পাখিটির দেহে। এদের পায়ে খুব শক্তি। মাটিতে যখন লাফিয়ে লাফিয়ে চলে তখন এর সৌন্দর্য দেখা যায়। তবে এরা প্রকৃতির কবিদের মত একা থাকতে পছন্দ করে। প্রজননের জন্য যখন জোড়া বাধেন তখন বাসা এবং বংশ বৃদ্ধির কাজে ব্যস্ত থাকেন। বাচ্চা একটু বড় হলে আবার উড়াল দিয়ে চলে যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ সোহেল
রানা।
নির্বাহী সম্পাদক: ডাঃ ফজলুর রহমান
(সবুজ)