চাঁপাইনবাবগঞ্জে একযোগে শুরু হয়েছে বোরে চাষের চারা রোপণ। ভোরের শীত উপেক্ষা করে বাড়ছে কৃষকদের কর্মব্যস্ততা। জমি তৈরি, হাল চাষ, বোরো ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠানো শেষে এবার চারা জমিতে রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে কেউ কেউ ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ কেউ স্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠাচ্ছেন। বেশকিছু জমিতে আবার অনেকে চারা রোপণ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ১’শ ৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৩ মেট্রিক টন। তবে গত বছর এ মৌসুমে ৫০ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল।
এর মধ্যে সদর উপজেলার ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে, গোমস্তাপুরে ১৫ হাজার ৪২০ হেক্টরের বিপরীতে ৩ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে, নাচোলে ৯ হাজার ৯৭০ হেক্টরের বিপরীতে ৫ হাজার ৬০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৭ হাজার হেক্টরের বিপরীতে ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর ও ভোলাহাটে ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমির বিপরীতে ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার কৃষক শরিফ ও গোবরাতলার দুলাল হোসেন জানান, আমন ধানের ফলন এবং ধানের দাম ভাল হওয়ায় এবার তারা বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছে। বিঘা প্রতি জমি কাদা করতে ট্রলির ভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা এবং গভীর নলক‚পে সেচের খরচ ১৬’শ টাকা করে নিচ্ছে। চারা রোপণে ১ জন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি দিতে হচ্ছে ৫শ’ টাকা এবং সেই সাথে খাবারও দিতে হয়।
সারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, এ ধান আবাদে খরচও বা তাতে সমস্যা নেই। তবে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারে বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ হাজার হেক্টর বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবার। এজন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।