বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে চত্বরে মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে। শনিবার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা ও শহর থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ি নিয়ে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন কারুশিল্প মেলায়। তা ছাড়া এ মেলায় বিদেশী পর্যটকদের রয়েছে মিলন মেলা।
ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, গত বছরে করোনার মহামারি কারনে কারুশিল্প মেলায় তেমন দর্শনার্থী আসেনি। গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৪ দিনে এই মেলায় লক্ষাধিক দশনার্থী এসেছেন। তা ছাড়া শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব প্রাঙ্গণ। গত ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ মেলার উদ্বোধন করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেলা চলবে।
ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সুত্রে জানা যায়, এ বছর মেলার বিশেষ আকর্ষণ হলো আয়োজক প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রদর্শনী দেশের প্রথিতযশা কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে ‘কর্মময় কারুশিল্পী’ প্রদর্শনী। মেলার মূল চত্বরের মাঠের মাঝে এর অবস্থান। ১০০টি স্টলের মধ্যে এ বছর বিশেষ প্রদর্শনীতে ২৪টি স্টলে রয়েছে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৪৮ কারুশিল্পী দেশের হারানো ঐতিহ্যকে আবার নতুন পজম্মের সঙ্গে পরিচয় করে দিতে এই মেলায় বসেই আবিষ্কার করছে নানা রকম পণ্য। প্রদর্শনীর গ্যালারিগুলো কারুশিল্পীরা তাদের স্বহস্তে তৈরি করছে সোনারগাঁয়ের দারুশিল্পের কারুকাজ, নকশী কাঁথা, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, রাজশাহীর মৃৎশিল্প-মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, নকশী কাঁথা, মুন্সীগঞ্জের শীতলপাটি, ঢাকার কাগজের শিল্প, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, ঠাকুরগাঁওয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুরার শোলাশিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁওয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলঙ্কার শিল্পসহ ইত্যাদি কারুপণ্য।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক এসএম রেজাউল করিম জানান, আবহমান গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে। মেলায় শেষ মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে, ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।